একাত্তরের বীরাঙ্গনা ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক রমা চৌধুরীর ‘একাত্তরের জননী’ শীর্ষক একক বইমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ১১টায় শাহবাগের গণগ্রন্থাগারে এ বইমেলার উদ্বোধন করেন ভাস্কর ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিনী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধে যে কয়জন নারী ছিলেন তার মধ্যে রমা চৌধুরী অন্যতম। আমরা তখন এ মহান ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবো যখন তার চেতনা ও সংগ্রাম অনুযায়ী একটি দেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘হেফাজত, জামায়াতসহ একাত্তরের ঘাতকরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে। আমরা তাদের দয়া করে যে বিচার করছি এটাই বেশি। কাজেই আগামী ১৬ ডিসেম্বরে আমাদের লক্ষ্য ধর্ম নিরপেক্ষ, লিঙ্গ নিরপেক্ষ ও ভাষা নিরপেক্ষ একটি স্বাধীন দেশ নির্মাণ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনবি চোর ও লুণ্ঠনের রাজনীতি করে। খোঁজ নিয়ে দেখেন তাদের এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদের অবস্থা। এ অবস্থায় বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তি নেলসন মেন্ডেলা ও বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর জীবনাদর্শই আমাদের একমাত্র পাথেয়।’
উদ্বোধন শেষে ভাস্কর ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিনী বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব বীরমাতা রমা চৌধুরীর আদর্শ বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেয়া। তবেই আমাদের এ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।’
তিনি এই বীরাঙ্গনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করেন।
সভাপতিরে বক্তৃতায় সাইফুর রহমান রবীন সকলকে বীরাঙ্গনা ফাউন্ডেশনের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাইফুর রহমান রবীনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কবি মাশুক সাহী, শামসুন নাহার কহিনুর, মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন, ক্রীড়া সংগঠক সানি মাহতাব, ইমরান হাসান প্রমুখ।
তিনদিনব্যাপী এ বইমেলা চলবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকেব। বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর একক এ বইমেলায় ৯টি বই রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- শহীদের জিজ্ঞাসা, স্বর্গে আমি যাবো না, নীল বেদনার খাম, যে ছিল মাটির, ভাব বৈচিত্রে রবীন্দ্রনাথ, আগুন রাঙা আগুন ঝরা অশ্রু ভেজা একটি দিন, একাত্তরের জননী, নির্বাচিত প্রবন্ধ ও রমা চৌধুরীর ১০০১ দিনযাপনের পদ্য।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘাতকরা রমা চৌধুরীর লেখা সব বইয়ের পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে দেয়।